কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি ঃ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে গড়াই নদ পাড়ের বালু। প্রায় ২০ দিন যাবৎ উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের এলংগী এলাকা থেকে বালু তুলছেন ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক। তিনি ইউনিয়নের বড়ুলিয়া বালু মহালের ইজারাদার ও কুষ্টিয়া থানা পাড়ার মেসার্স রিভারভিউ ট্রেডান্সের স্বত্বাধিকার।
এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আর অন্যদিকে হুমকিতে পড়েছেন লালন আবাসন কেন্দ্রের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার ও কয়েক শত বিঘা নদপাড়ের ফসলি জমি।
তবে বালু উত্তোলনকারীরা বলছেন, ইজারা নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই বালু তোলা হচ্ছে। নিয়ম বহির্ভূত হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। এতে সাংবাদিকের কি?
আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পার্শ্ববর্তি বড়ুলিয়া এলাকা ইজারা দেওয়া হয়েছে। এলংগী এলাকা টেন্ডারের অপেক্ষায়। যদি এলংগী এলাকার বালু উত্তোলন করা হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর আগে লালন আবাসন কেন্দ্র প্রতিরক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নন্দনালপুর ইউনিয়নের বড়ুলিয়া ও এলংগী এলাকার প্রায় তিন কিলো মিটার গড়াই নদের পাড় বেঁধেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বড়ুলিয়া এলাকার বালু ইজারা দেওয়া হয়েছে। আর এলংগী এলাকা রয়েছে ইজারার অপেক্ষায়। কিন্তু বড়ুলিয়া এলাকার ইজারাদার এলংগী এলাকার বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করছেন।
আরো জানা গেছে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আর অন্যদিকে হুমকিতে পড়েছেন লালন আবাসন কেন্দ্রের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার ও কয়েক শত বিঘা নদপাড়ের ফসলি জমি।
রোববার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, একটি এক্সে – বেটর দিয়ে বালু কেটে ড্রাম ট্রাক ও সেলো ইঞ্জিন চালিত গাড়ি করে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
এবিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, ‘ আমি বড়ুলিয়া ও এলংগী এলাকা প্রায় ২২লক্ষ টাকায় ইজারা নিয়েছে। আমি নিয়ম মেনেই বালু কাটছি। নিয়ম বহির্ভূত হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। এতে সাংবাদিকের কি? আপনি যত পাড়েন লিখে যান।’
কিন্তু বালু মহাল প্রভাবশালী হওয়ায় এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি এলাকাবাসী। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, এখান থেকে বালু কাটল হুমকিতে পড়বে লালন আবাসন কেন্দ্র ও কয়েক শত বিঘা নদপাড়ের ফসলি জমি।
লালন আবাসন কেন্দ্রের সভাপতি মো. আকুল উদ্দিন বলেন, ‘ আবাসন রক্ষার জন্যই বাঁধ নির্মাণ করেছে সরকার। আবার সেই সেই বাঁধই কাটা হচ্ছে। তাহলে আবাসনের কি হবে? এত টাকা দিয়ে বাঁধ করার দরকার কি? দ্রুত বাঁধের বালু কাটা বন্ধ করা হোক।’
এবিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ বড়ুলিয়া এলাকার বালু বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু এলংগী এলাকাটি টেন্ডারের অপেক্ষায়। যদি ইজারাদার (খালেক) এলংগী এলাকার বালু উত্তোলন করেন, তাহলে হয় তার ওয়ার্ক ওর্ডার বাতিল করা হবে। অথবা উত্তোলিত বালুর সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’