শাহাজামান বাদশা,পাইকগাছা খুলনা
পাইকগাছা উপজেলা সহ সারাদেশের মুরগি খামারি ও ব্যবসায়ীরা খুবই প্রতিকূল সময় পার করছেন। পাইকগাছায় বিভিন্ন অঞ্চলের যুবকরা এক সময় খামারে মুরগি পালন করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে খামারের বিভিন্ন পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে ধীরে ধীরে গুটিয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই খামার ব্যবসা।
গত বছরের করোনার ক্ষতি সামাল দিতে না পেরে অনেকেই ঋণ নিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে আরও লোকসানে পড়েছেন। অনেকেই খামার বন্ধ করে দিয়ে তাদের পেশা বদলে ফেলেছেন। বেকার একজন যুবক উদ্যোক্তা হয়ে যখন খামারের মুরগি পালন করত, তখন তার পরিবারের খরচের চাহিদা ভালভাবে মিটাতে পারত । কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ খামার ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে বিভিন্ন কাজের দিকে ছুটছেন।
সারাদেশে খামারি পর্যায় গড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১০৮/১১০ টাকায়। অথচ এক কেজি ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা।
কেজি প্রতি ২৫ টাকা লস। ২ কেজী ওজনের মুরগী হলে একটা খামারির যদি ১০০০ মুরগি চাষ করে তার লস দাঁড়ায়
( ৫০×১০০০=৫০০০০) টাকা। এই হিসেবে দেখা গেছে শুধুমাত্র পাইকগাছা উপজেলার, কপিলমুনি ও পাইকগাছায় খামারিদের প্রতিমাসে আনুমানিক লস হচ্ছে প্রায় ১,২৪,২০,০০০/= টাকার মত।
সরেজমিন গিয়ে প্রত্যক্ষ করা যায়, দুই থেকে তিন বছর আগে যেসব বেকার যুবক বা ব্যবসায়ী খামারে সফলতা লাভ করেছেন তার এখন চোখে ধোঁয়াশা দেখছেন। অনেকে আবার এই পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজের খোছে ছুটছেন।
পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের নতুন বাজারের সততা পোল্ট্রি ফিডের মালিক ও খামার ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল মিলন বলেন, ‘২০২১-২২ সালে প্রতিটি বস্তায় মুরগির খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি হয়েছে। আগে যে বস্তা আমরা ক্রয় করতাম ১৮৫০ টাকা দিয়ে। এখন তার কিনতে হচ্ছে ৩২৫০/৩৩০০ টাকা দিয়ে। এভাবে দাম বৃদ্ধি পেতে থাকলে ও দাম না কুমলে জনপ্রিয় ব্যাবসা এই খামার গুলো অতি শিগ্রই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
পাইকগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিঞ্চুপদ বিশ্বাস বলেন, ‘ওষুধ এবং খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন পাইকগাছা উপজেলার খামারিরা। ওষুধ এবং খাদ্যদ্রব্যের দাম শিগগিরই সহনীয় অবস্থায় না এলে খামার ব্যবসায়ীদের জন্য একটি দুর্বিষহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।’ খাদ্যদ্রব্যের দাম কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে বা ওষুধের দাম চড়া কেন? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘বর্তমান বাজারে সবকিছুর দাম বৃদ্ধির কারণে হয়তো ওষুধ ও খাদ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।’