শাহাজামান বাদশা,পাইকগাছা খুলনা
পাইকগাছা উপজেলার আয়তন প্রায় ৩৮৩.৮৭ বর্গকিঃমিঃ এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ২,৪৭,৯৮৩ জন। এই জনসংখ্যার চিকিৎসা সেবার একমাত্র মাধ্যম হল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট পইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় ঠান্ডা ও গরমের সময় এই হাসপাতালে শিশু রুগী বেড়ে যায় এই হাসপাতালে নেই কোন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ফলে হাসপাতালগুলোতে মিলছে না সু-চিকিৎসা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দারিদ্র অভিভাবকদের সুচিকিৎসা না পেয়ে জেলা শহরে এসে সন্তানের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমসিম খেতে হয়। অধিকাংশই খরচের ভয়ে স্থানীয় মেডিকেল ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন। ফলে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেশি ভাগই শিশু রুগী।
পাইকগাছা হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশু রোগী বাড়ায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতেও রোগীর চাপ বাড়ছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বেশির ভাগ শিশু। পাইকগাছায় দীর্ঘদিন ফাঁকা রয়েছে শিশু কনসালটেন্ট পদ।
সরেজমিনে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলা থেকে খুলনা জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার, পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও নেই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সেখানে মেডিকেল অফিসাররা আগত শিশুদের চিকিৎসা প্রদান করেন। সমস্যা জটিল হলে খুলনা মেডিকেলে কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে গত সাত দিনে ২৬ জন। তন্মোধ্যে ১৫ জনের ডায়রিয়া, ৭ জন নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট এবং বাকি ৪ জন অনন্য রোগে। বর্তমানে ১০/১/২৩ তারিখে শিশু রুগী ভর্তি আছে ১২ জন। বহি:বিভাগেও শিশুরোগীর চাপ বেড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
ডায়রিয়ায় ভর্তি শিশু রুগী রিদ্দিমান (৩) এর পিতা নিহার রজ্ঞন মন্ডল বলেন, ডায়রিয়ার কারণে আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসছি। দু’দিনে খুব বেশি উন্নতি হয়নি। মেডিকেল অফিসাররা চিকিৎসা দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকলে আরও ভাল চিকিৎসা পেতাম।
সপ্তাহের শুক্রবারে খুলনা থেকে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এসে নুরজাহান মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন। এছাড়া অধিকাংশ সময় গ্রামের ডাক্তার ও হাসপাতালে আনা লাগলে মেডিকেল অফিসার দেখাই। গরিব মানুষ শহরে নিতে পারিনা। এই হাসপাতালে একটি শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলে উপজেলার মানুষ উপকৃত হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নিতীশ চন্দ্র গোলদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ফাঁকা রয়েছে শিশু বিশেষজ্ঞ পদ। এখানে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় মেডিকেল অফিসার দিয়ে শিশুদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।সমস্যা জটিল হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলে উপজেলার মানুষ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সেবা পেত ও শিশু রুগীদের চিকিৎসা সেবা আরও উন্নত হত।